News/Blogs
হাত ও হাতঘড়ি
আগে সময় দেখতেই হাতে সেটে নিত সমাজের উচ্চ স্থানীয়রা। তবে হালে মূল কাজের চেয়ে ফ্যাশনের অনুসঙ্গ হিসাবেই বহুল ব্যবহার। হ্যাঁ, বলছি হাতঘড়ির কথা। ছোটবেলা থেকেই বস্তুটির প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করতাম। স্বপ্ন ছিল সুন্দর একটি ঘড়ির। পূরনও হয়েছিল অল্প কিছুদিনের মধ্য। তখন আমি প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র। ক্যাসিও ঘড়িটা ছিল আমার ২৪ ঘন্টার সঙ্গী। কী ঘুমের সময় আর কী গোছলের সময় কখনই নামত না আমার হাত ছেড়ে। একবার কাঁদাপানিতে মাছ ধরার সময় আমার হাতে ঘড়ি দেখে গ্রামের এক চাচা খুব বকেছিল। সেসময় তাকে বোঝানোর চেষ্টাও করিনি এটা ওয়াটার রিসিস্ট পানিতে কোন সমস্যা হয়না। অবশ্য পরে আমি নিজেই নষ্ট করেছিলাম বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষা চালাতে গিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আরো একটি প্রিয় ঘড়ি ছিল। গ্লোন্ডেন কালারের হওয়ার কারনে ওই ঘড়িট পরলেই অন্যরা জিজ্ঞাসা করত বিয়ে করেছি কিনা। তখন লজ্জা পেতাম। মাঝে মাঝে রাগও উঠত ওই ঘড়িটার উপর, একইসঙ্গে ওইসব মন্তব্যকারীর প্রতিও। যাহোক প্রতিদিনের মত একদিন ঘড়িটা পরে বের হয়েছিলাম, সেদিন ডিপারর্টমেন্টের এক বড় ভাই ঘড়িটার খুব প্রশংসা করল। আর আমিও প্রশংসা শুনে গদগদ। জিজ্ঞাসা করলাম ঘড়িটা নিবেন কিনা। সে চটজলদি অফারটি গ্রহণ করল। অবশ্য এজন্য কিছু টাকাও দিয়েছিল। ঘড়িটি দিয়ে দেয়ার পরে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল ফেরত নিয়ে নিই। একবার গিয়েছিলামও ফেরত আনতে। কিন্তু তার কাছে যাওয়ার পর চক্ষুলজ্জার খাতিরে আর বলা হয়নি।
এখন মোবাইলের যুগ। এযুগে হাতঘড়ির প্রয়োজন কমেছে। তবে ব্যবহার কমেনি। অনেকের মত আমিও ব্যবহার করি। বাইরে বের হওয়ার সময় হাতে ঘড়ি না থাকলে হাত কেমন জানি খালি খালি লাগে। মাঝে মধ্যে ঘড়ি হাতে দিতে ভুলে গেলেও সময় দেখার জন্য হাতের দিকে তাকাতে ভুল হয় না। ঠিক তখনই দেখি শুধু হাত আছে, হাতে ঘড়ি নেই—–
#২৫ এপ্রিল ২০১৪ রাত_৩.০০টা